,

মেডিকেল পড়ুয়া ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা – বাবা

এহসানুল হক রিপন,ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ ২০ বছর বয়সী ছেলে দেখতে যেমন সুন্দর, মেধাও ছিলো তাঁর প্রখর। ছোট বেলা থেকে সে ছিলো শান্ত স্বভাবের। পড়াশোনা করতো গ্রীণ লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকায়। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলের স্বপ্ন পূরণে সব ধরনের সার্পোট দিচ্ছিলেন প্রবাসী বাবা জহিরুল হক ভূঞা।

গত দুই মাস আগে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছিল আরিফ বিল্লাহ। মেধাবী এ শিক্ষার্থী প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পযর্ন্ত সবকিছুতেই ছিল সেরা। সাফল্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তার গন্তব্যের দিকে। সে অনেক বড় হবে একজন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করবে এমনটাই স্বপ্ন ছিল তার ও পরিবারের। কিন্তু সব স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। স্বপ্ন পূরণের আগেই আরিফ বিল্লাহ লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলো।

গতকাল রোববার চম্পকনগর ফতেপুর গ্রামে আরিফ বিল্লাহ বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। বাবা জহিরুল হক ভূঞার করুণ আর্তনাদ। আত্নীয় স্বজনের চোখে পানি টলমল করছে। মেধাবী ছাত্র আরিফ বিল্লাহকে হারিয়ে তার প্রবাসী বাবা-মা এখন বাকরুদ্ধ। আশপাশের লোকজন আসা যাওয়া করছে। সবাই কাঁদছে। চম্পকনগর জনপদে নেমেছে শোকের ছায়া। স্তব্ধ হয়ে আছে পুরো বাড়িটা। নিহতের পরিবার সুত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (২৭ আগষ্ট) বিকালে মেডিকেল কলেজের ডকুমেন্টের জন্য বন্ধুর সাথে দেখা করার উদ্যোশে বাড়ি থেকে বেড় হয়ে চম্পকনগর ঘাট থেকে নৌকা যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে লইসকা বিলে নৌকা ডুবির দূর্ঘটনায় প্রাণ হারায় সে। গতকাল রোববার চম্পকনগর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামে নিহত আরিফ বিল্লাহ’র নামাজে জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে। ছেলেকে হারিয়ে বাবা- মা অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। বাবা জহিরুল হক ভুঞা ভাঙ্গা গলায় বলেন, আমার দুই ছেলে। এর মধ্যে আরিফ বিল্লাহ বড়। ছেলের স্বপ্ন পূরণে আমি সব করেছি। আজ আমার ছেলে কই? এমন কথা বলেই তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তার দুই চোখে শুধু বিষাদের জল। ছেলে হারানোর বেদনায় ক্ষনেক্ষনে মূর্ছা যাচ্ছেন মা। আত্নীয় স্বজনদের চোখের জল আর কান্নায় পুরো এলাকার বাতাস যেন ভারী হয়ে উঠেছে।

নিহত আরিফ বিল্লাহ’র স্বজনরা জানান, নৌকা দূর্ঘটনার মূল কারণ ঘাটের সিন্ডিকেট ও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই আর অদক্ষ মাঝি। যদি দক্ষ মাঝি হতো আর ঘাটে সঠিক নিয়ম শৃংখলা থাকতো তাহলে আজ এ মর্মান্তিক নৌ দূর্ঘটনা ঘটতো না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *